কিছু গুরুত্বপূর্ণ খবরা-খবর এর মধ্যে এই খবরটি আপনাদের সাথে শেয়ার করার একটাই কারন হল, ফেসবুক বর্তমানে কিছু নতুন নীতিমালা তৈরি করেছে। সেখানে সবচেয়ে বেশি একাউন্টের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
২৮ অক্টোবরের মধ্যে এ ধরনের অ্যাকাউন্ট নিরাপত্তা সম্পর্কিত কাজটি না করলে যে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ব্লক হয়ে যাবে এটি এমনটি নয়। তবে অনেকগুলো ব্লগ সাইটে আমি পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি যে তারা এ ধরনের একটি পোষ্ট প্রকাশ করতেছে যে, ২৮ অক্টোবরের মধ্যে যে কাজটি না করলে ফেসবুক ব্লক হয়ে যাবে।
ফেসবুক নাকি আবার এর জন্য আলাদা করে নোটিফিকেশন পাঠাচ্ছে। যাইহোক আমার এখনো এই ধরনের কোন নোটিফিকেশন আসে নি তারপরেও আপনাদের সাথে প্রাইভেসি প্রডাক্ট বা নিজেকে সুরক্ষিত রাখার জন্য কি করতে হবে তা দেখিয়ে দিচ্ছি।
২৮ অক্টোবরের মধ্যেই আপনার অ্যাকাউন্ট ব্লক হোক বা না হোক কিন্তু যদি প্রাইভেসি প্রটেক্টর আপনি অন করে রাখেন তাহলে কিন্তু আপনার নিজের জন্যই ভালো। কারণ বর্তমানে ইন্টারনেট দুনিয়ায় আপনি অনায়াসেই যেকোনোভাবে ফাঁদে পড়তে পারেন। আর এই ফাঁদে পড়া থেকে বাঁচতে আপনাকে কিছু পদক্ষেপ নেয়া লাগতেই পারে।
তাহলে চলুন আপনি ফেসবুক প্রাইভেসি প্রটেক্টর কিভাবে অন করবেন তা জেনে নেই
প্রথমেই বলে নেই আপনি যদি ফেসবুক মোবাইলে ব্যবহার করেন তাহলে অবশ্যই ফেসবুকের অফিশিয়াল অ্যাপ টি ডাউনলোড করে নিবেন। কারন অনেকেই আছেন যে ফেসবুকের লাইট অ্যাপ ব্যবহার করেন। আপনারা জানেন যে ফেসবুকের লাইট অ্যাপ এ অনেক ধরনের অপশন ডিজেবল করা থাকে। তাই এ কাজটি করার জন্য আপনাকে প্রথমেই ফেসবুকের অফিশিয়াল অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে অথবা কম্পিউটারে ফেসবুক লগইন করতে হবে।
ফেসবুক লগইন করার পর সর্বপ্রথম আপনারা সেটিংস এন্ড প্রাইভেসি অপশনে যাবেন।
সেটিংস এন্ড প্রাইভেসি অপশন থেকে আপনারা সেটিংস অপশনে যাবেন।
স্ক্রিনশট দেখে দেখে আপনি নিজের মতো করে সামনের দিকে এগোতে পারবেন।
এরপরেও যদি সমস্যা হয় তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন।
সেটিংস অপশনে যাওয়ার পর এবার আপনাকে যেতে হবে সিকিউরিটি সেটিংসে। আপনি একটু স্ক্রল করার পরেই সিকিউরিটি সেটিংস টি দেখতে পাবেন।
এবার সিকিউরিটি সেটিংস থেকে যাবেন সিকিউরিটি এন্ড লগইন অপশন এ। আশা করি আপনি এতোটুকু পর্যন্ত আসতে পেরেছেন।
মোটামুটি আপনি অর্ধেক কাজ সেরে ফেলেছেন। সিকিউরিটি এন্ড লগইন অপশন এর প্রথম দিকেই দেখতে পারবেন একটি অপশন রয়েছে যেখানে লেখা রয়েছে চেক ইয়োর ইম্পরট্যান্ট পাসওয়ার্ড এন্ড সিকিউরিটি সেটিংস।
এই অপশনটিতে ঢোকার পর আপনি দেখতে পাবেন আপনার মূল সেটিংস গুলো ঠিক আছে কিনা। দেখুন আমার এখানে দুটি টিকমার্ক রয়েছে। অর্থাৎ তিনটি অপশনের মধ্যে আমি দুটি কাজ সম্পন্ন করে ফেলেছি আগেই।
মূলত আপনি এই তিনটি অপশন চালু করার মাধ্যমে আপনার একাউন্ট কে আরো শক্তিশালী করতে পারবেন।
তাহলে চলুন এই তিনটি অপশন কিভাবে আরো ভালো ভাবে সম্পন্ন করা যায় তা দেখি।
- প্রথম অপশনটি হলো পাসওয়ার্ড
- দ্বিতীয় অপশনটি হলো লগইন এলার্ট
- তৃতীয় অপশনটি হলো টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন
প্রথম অপশন এ ক্লিক করুন।
সেখানে আপনি পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করার একটি সুযোগ পাবেন। এবার পাসওয়ার্ড পরিবর্তন অপশন এ ঢুকে আপনি রীতিমত কঠিন একটি পাসওয়ার্ড বাছাই করবেন যেখানে স্মল লেটার, ক্যাপিটাল লেটার, সংখ্যা, এবং সিম্বল সবকিছু মিলে একটি পাসওয়ার্ড থাকবে। এ ধরনের পাসওয়ার্ড দিয়ে দিলে আপনি কিন্তু অনেকটাই নিজেকে নিরাপদ করতে পারবেন হ্যাকার থেকে।
দ্বিতীয় অপশনটি রয়েছে লগইন এলার্ট
অর্থাৎ আপনি যখন আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লগইন করবেন তখনই আপনাকে একটি অ্যালার্ট এর মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে যে আপনি ফেসবুকে লগইন করেছেন। যদি এটি আপনি না হয়ে অন্যকেউ হয় তাহলে তো অবশ্যই আপনার সাথে সাথে জানতে পারবেন যে কেউ একজন আপনার অ্যাকাউন্টে লগইন করতেছে বা করার চেষ্টা করতেছে।
লগইন এলার্ট অপশনে ঢোকার পর আপনি তিনটি অপশন দেখতে পাবেন।
- ফেসবুক
- মেসেঞ্জার
- ইমেইল
তিনটি অপশন ই আপনি এনাবল করে দিবেন লগইন অ্যালার্ট করার জন্য।
এই কাজটি হয়ে গেলে আপনি দেখতে পারবেন আপনার তিনটি কাজের মধ্যে দুটি কাজের সঠিকতা নিরূপণ হয়েছে।
এবার আসি তৃতীয় অপশন টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন
টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন অপশন এ ঢুকুন। সেখান থেকে আপনি অবশ্যই উপরের মেসেজটি থাকবে মেসেজটা ভালোভাবে পড়ে নিবেন। মূল ব্যাপারটা হল এই অপশনটি অন করলে আপনার মোবাইল নাম্বার লাগবে। মোবাইল নাম্বার দিয়ে অপশনটি এনাবল করার পর আপনি যখন আপনার সঠিক পাসওয়ার্ড টি দিয়ে ফেসবুকে লগইন করার চেষ্টা করবেন তখনই আপনার মোবাইলে একটি ছয় অক্ষরের পিন কোড আসবে।
ওই পিন কোড টি ফেসবুকে প্রবেশ করানোর পরেই আপনি অ্যাকাউন্ট অ্যাক্সেস করতে পারবেন। অন্যথায় কখনোই অ্যাকাউন্ট অ্যাক্সেস করতে পারবেন না সেক্ষেত্রে আপনাকে পুনরায় পাসওয়ার্ড রিসেট করে নিতে হবে।
অর্থাৎ মোবাইল নাম্বার আপনার সাথেই থাকতে হবে যখন আপনি ফেসবুকে লগইন করবেন অন্য কোন নতুন ব্রাউজারে। কারণ একবার লগইন করার পর ওয়েব ব্রাউজারে আর লগ আউট না করা পর্যন্ত টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন প্রসেস চালু হয় না।
আপনি যে কোন একটি আইডিতে এই একটি নাম্বার ব্যবহার করতে পারবেন টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন জন্য। যদি একই নম্বর একবার ব্যবহার করার পর অন্য কোন একাউন্টে আবার ব্যবহার করার চেষ্টা করেন তাহলে আপনি আগের অ্যাকাউন্টে টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন এর ফিচারটি বন্ধ হয়ে যাবে।
টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন চালু করার জন্য গেট স্টার্টেড অপশনে ক্লিক করুন। প্রেস করার পর আপনি সেখানে আবার তিনটি অপশন পাবেন। সেখানে আপনি মাঝের অপশনটা অর্থাৎ টেক্সট মেসেজ অপশনে ক্লিক করুন।
দেখবেন এবার আপনার মোবাইল নাম্বার যোগ করতে বলতেছে অথবা যদি আগেই মোবাইল নাম্বার যোগ করা থাকে তাহলে সেখানে আপনি নাম্বারটি দেখতে পাবেন।
এবার পরবর্তী অপশনে ক্লিক করার পর আপনি আপনার মোবাইলে একটি এসএমএস পাবেন ওই এসএমএসে যে কোডটি দেওয়া থাকবে ওই কোডটি এখানে প্রবেশ করার পর আপনি টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন এনাবল করে ফেলতে পারবেন।
আমি ঠিক এই মুহূর্তে টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন এনাবল করছি না।
আশা করি, আপনি এই তিনটি অপশন সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পারবেন নিজে নিজেই। এবং তিনটি অপশন এনাবল করার মাধ্যমে আপনি কিন্তু আপনার অ্যাকাউন্টের প্রোটেকশন আরো বৃদ্ধি করে দিলেন। ফেসবুক আসলে এটি চাই যে, আপনার অ্যাকাউন্ট যেন অন্য কেউ কখনো একসেস করতে না পারে।
এটি আপনার ব্যক্তিগত লাভ কারন ফেসবুক চায় আপনার অ্যাকাউন্ট নিরাপদ থাকুক।
আজ এ পর্যন্তই। যদি আপনার মনে হয় আপনি এই পোস্ট থেকে এতোটুকু উপকৃত হয়েছেন তাহলে অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করার চেষ্টা করবেন আপনাদের বন্ধুদের মাঝে।