গুগল ড্রাইভের যাত্রা শুরু হয় ২৪ এপ্রিল ২০১২ সালে। তথ্য সংরক্ষণ ও আদান-প্রদানের জন্য গুগল ড্রাইভ বর্তমানে বিশ্বের সবথেকে বেশি জনপ্রিয়। গুগল ড্রাইভ হচ্ছে গুগলের একটি ফাইল সংরক্ষণের একটি সেবা।
আর অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনে গুগল ড্রাইভ অ্যাপ বিল্ট-ইন দেওয়া থাকে বর্তমানে। Google ড্রাইভ এর মাধ্যমে খুব সহজে যেকোন তথ্য (যেমনঃ ছবি, ভিডিও, অডিও, টেক্সট) ইত্যাদি সংরক্ষণ রাখা যায়। সংরক্ষণ রাখার পাশাপাশি যে কোন প্রয়োজনের সময় সেগুলো ডাউনলোড করে ব্যবহার করা যায়।
আবার চাইলে কোন ফোল্ডারে তথ্য রেখে সেগুলো অন্য মানুষদের সাথে শেয়ার করা যায়। আর এই কারণগুলোর কারণেই গুগল drive সব থেকে বেশি জনপ্রিয়।
গুগল ড্রাইভ এর কাজ কি
যেকোনো প্রকার তথ্য সংরক্ষণ করাই হচ্ছে গুগল ড্রাইভের মূলত প্রধান কাজ। গুগল ড্রাইভে ফ্রি ১৫ জিবি জায়গা থাকে।
যেখানে আপনি সকল তথ্য ও সংরক্ষণ করার জন্য ১৫ জিবি জায়গা পাবেন। Google ড্রাইভের সব থেকে বেশি সুবিধা হচ্ছে কোন ফোল্ডার তৈরি করে সেখানে কোন কিছু রেখে তার লিংক শেয়ার করলে যে কেউ সেই ফোল্ডারে ঢুকতে পারবে এবং সেখানে থাকা তথ্যগুলো ডাউনলোড করতে পারবে।
রেস্ট্রিকশন মুড রয়েছে গুগল ড্রাইভে, যেখানে লিংক শেয়ার করলেও যেকোন মানুষ আপনার এক্সেস নেওয়া ছাড়া সেই ফোল্ডারে ঢুকতে পারবে না।
গুগল ড্রাইভ থেকে ডাউনলোড করার নিয়ম
যদি আপনি নিজে গুগল ড্রাইভে কিছু রেখে থাকেন তাহলে যা রেখেছেন সেখানে ক্লিক করলেই Download অপশন দেখতে পাবেন।
স্মার্টফোনের মাধ্যমে ডাউনলোড
স্মার্টফোনের মাধ্যমে গুগল ড্রাইভ থেকে কোন কিছু ডাউনলোড করতে চাইলে, যা ডাউনলোড করতে চাচ্ছে তার পাশের থ্রি ডট আইকলে ক্লিক করতে হবে। থ্রী ডট আইকলে ক্লিক করলে নিচের দিকে Download করার জন্য একটি অপশন পাবে। সেখান থেকে ডাউনলোড করতে পারবে।
আর যদি অন্য কারোর লিংকের মাধ্যমে হয়ে থাকে তাহলে ড্রাইভ অ্যাপে হোম স্ক্রীনে একদম নিচের দিকে Shared নামের একটি অপশন দেখতে পাবে। সেখান থেকে অন্য কারো লিংকের সকল তথ্য দেখা যাবে ও যেকোন ফোল্ডার বা ফাইল থ্রী ডট আইকনে ক্লিক করে ডাউনলোড করা যাব।
কম্পিউটারের মাধ্যমে ডাউনলোড
কম্পিউটারের মাধ্যমে গুগল ড্রাইভ থেকে কোন কিছু ডাউনলোড করতে চাইলে, যা ডাউনলোড করতে চাচ্ছে তার উপর মাউস রেখে মাউসের ডান পাশের বাটন ক্লিক করতে হবে। ডান পাশের বাটন ক্লিক করলেই অনেকগুলো অপশন দেখতে পাবে। সেখান থেকে নিচের দিকে Download নামের একটি অপশন দেখা যাবে এবং সেই অপশনে ক্লিক করে ডাউনলোড করা যাবে।
বিদ্রঃ আর স্মার্টফোন বা মোবাইলের ক্ষেত্রে যদি অন্য কারো দেওয়া গুগল ড্রাইভ লিংক হয়ে থাকে তাহলে সেই লিংক যদি Anyone with the link হয়ে থাকে তাহলে খুব সহজে সেই লিংকে ঢুকে ড্রাইভে থাকা সকল তথ্য ডাউনলোড করতে পারবেন।
কিন্তু যদি গুগল ড্রাইভ লিংক Restricted করা থাকে তাহলে আপনাকে Request Access বাটনে ক্লিক করে সেই লিংকের এক্সেস চাইতে হবে। এতে করে যে সেই google ড্রাইভ লিংকটি তৈরি করেছে তার কাছে আপনার ইমেইল চলে যাবে, সেই ব্যক্তি যদি এক এক্সেস দিয়ে দেয় তাহলে আপনি সেই google ড্রাইভ লিংকে যেকোন সময় ঢুকতে পারবেন।
আর অনেকেই Google drive ব্যবহার করে থাকে কারণ গুগল ড্রাইভ থেকে যেকোনো কিছু হাই-স্পীডে ডাউনলোড করা যায়।
গুগল ড্রাইভে ফাইল আপলোড করবেন কিভাবে
স্মার্টফোন ও কম্পিউটার উভয়ের মাধ্যমেই গুগল ড্রাইভে যেকোন ফাইল খুব সহজে আপলোড করতে পারবেন।
স্মার্টফোনের মাধ্যমে আপলোড
গুগল ড্রাইভ ফাইল আপলোড করার জন্য আপনি মোবাইল থেকে গুগল ড্রাইভ অ্যাপ এ ঢুকলেই একটি + আইকন দেখতে পারবেন। আর সেই প্লাস আইকনে ক্লিক করলে ফোল্ডার তৈরি করা, কোন কিছু আপলোড, স্ক্যান ইত্যাদি দেখতে পারবেন।
সেখান থেকে Upload অপশনে ক্লিক করলেই স্মার্টফোন থেকে যেকোনো ফাইল খুব সহজে আপলোড করা যাবে।
কম্পিউটারের মাধ্যমে আপলোড
কম্পিউটারে গুগল ড্রাইভ ব্যবহার করার জন্য গুগল ড্রাইভ সফটওয়্যার ডাউনলোড করে ইনস্টল করতে পারেন কিংবা ব্রাউজার থেকে https://drive.google.com/drive এই লিঙ্গক ব্যবহার করে গুগল ড্রাইবে অ্যাকাউন্ট লগইন করে আপলোড করতে পারবেন।
কম্পিউটারের মাধ্যমে গুগল ড্রাইভে ফাইল আপলোড করার জন্য প্রথমে গুগল ড্রাইভে ঢুকতে হবে। এরপর একদম বা-পাশে New নামের একটি অপশন দেখতে পাবেন।
সেই New অপশনে ক্লিক করলে File Upload এবং Folder Upload অপশন দেখা যাবে। এগুলোর মাধ্যমে কম্পিউটার থেকে ফাইল ও ফোল্ডার আপলোড করতে পারবেন খুব সহজে।
গুগল ড্রাইভ ব্যবহার করা কতটা নিরাপদ
Google drive যেহেতু গুগলের একটি ফিচার তাহলে বুঝতে পারছেন এর সিকিউরিটি কতটা উন্নত মানের। আপনি গুগল ড্রাইভে কোন কিছু সংরক্ষণ রাখলে এবং তার লিংক যদি কারো সাথে শেয়ার না করেন তাহলে আপনার সেই সংরক্ষন করা তথ্য শতভাগ নিরাপদ।
কিন্তু যদি সংরক্ষণ রাখা তথ্যের লিংক Anyone with the link করে শেয়ার করেন তাহলে যেকোনো ব্যক্তি সেই লিংক এর মাধ্যমে আপনার সংরক্ষণ রাখা তথ্য ডাউনলোড করতে পারবে ও ব্যবহার করতে পারবে।
তাই সংরক্ষণ রাখা তথ্য নিরাপদ রাখার জন্য এইদিকে আপনার বিশ্বাস নজর রাখতে হবে। আপনার শেয়ার করা তথ্য দেখে-শুনে শেয়ার করতে পারেন। তবে নিয়মের বাইরে গিয়ে google drive এ কোন ব্যক্তি আপনার তথ্য চুরি করতে পারবে না।
বিশেষ করে তথ্য আদান-প্রধানের জন্য গুগল ড্রাইভ অনেকে ব্যবহার করে থাকে। কারণ আদান প্রদানের সেই লিংক যদি আপনার কাছে থাকে তাহলে যে কোন জায়গায় বসে যে কোন সময় প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
গুগল ড্রাইভ স্টোরেজ এর দাম কত
গুগল ড্রাইভ ব্যবহার করার জন্য Google প্রতিটি একাউন্টকে ১৫ জিবি পর্যন্ত ফ্রি স্টোরেজ দিয়ে থাকে। এতে করে যেকোনো ব্যক্তি ফ্রিতে ১৫ জিবি পর্যন্ত যেকোন তথ্য গুগল ড্রাইভে সংরক্ষন রাখতে পারবে ও প্রয়োজনের সময় ডাউনলোড ও ব্যবহার করতে পারবে।
কিন্তু ১৫ জিবি স্টোরেজ ভরে গেলে তাকে সেই একাউন্টে গুগল ড্রাইভ ব্যবহার করার জন্য আরও স্টোরেজ ক্রয় করতে হবে।
আর সেই স্টোরেজের দাম একেক রকম হয়ে থাকে স্টোরেজ অনুযায়ী। এবং সেই স্টোরেজদের জন্য প্রতি মাসে বা বছরে আপনাকে পেমেন্ট করতে হয়।
প্রতি মাসের জন্য,
১০০ জিবি স্টোরেজ ব্যবহার করার জন্য প্রতি মাসে ৬.৯৯ SAR অর্থাৎ প্রায় ২০০ টাকা পেমেন্ট করতে হবে।
২০০ জিবি স্টোরেজ ব্যবহার করার জন্য প্রতি মাসে ১০.৯৯ SAR অর্থাৎ প্রায় ৩১০ টাকা পেমেন্ট করতে হবে।
২ টেরাবাইট স্টোরেজ ব্যবহার করার জন্য প্রতি মাসে ৩৪.৯৯ SAR অর্থাৎ প্রায় ১০০০ টাকা পেমেন্ট করতে হবে।
প্রতি বছরের জন্য,
১০০ জিবি স্টোরেজ ব্যবহার করার জন্য প্রতি বছরে ৬৯.৯৯ SAR অর্থাৎ প্রায় ২,০০০ টাকা পেমেন্ট করতে হবে।
২০০ জিবি স্টোরেজ ব্যবহার করার জন্য প্রতি বছরে ১০৯.৯৯ SAR অর্থাৎ প্রায় ৪,০০০ টাকা পেমেন্ট করতে হবে।
২ টেরাবাইট স্টোরেজ ব্যবহার করার জন্য প্রতি বছরে ৩৪৯.৯৯ SAR অর্থাৎ প্রায় ৯,৮৫০ টাকা পেমেন্ট করতে হবে।