একজন মুসলমানের জন্য হালাল হারাম খাবার বেছে গ্রহণ করা অপরিহার্য। কারণ ইবাদত কবুল হওয়ার পূর্ব শর্ত হচ্ছে হালাল খাবার গ্রহণ করা।
কোরআন ও হাদিসে বারবার হারাম খাবার থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহতালা সুরা বাকারার ১৮৮ নাম্বার আয়াতে বলেছেন, তোমরা অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে দখল করিও না।
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে (সূরা আনআম, আয়াত ১৪৫) বলেন, আপনি বলে দিন আমার নিকট যে ওহি পাঠানো হয়, আহারকারী যা আহার করে তাতে আমি কোন হারাম খাবার পাই না, তবে যদি মৃত কিংবা প্রবাহিত রক্ত অথবা শূকরের গোস্ত হয়, তবে এটা নিশ্চয়ই অপবিত্র অথবা অবৈধ।
আমরা দুই ধরনের খাবার গ্রহণ করে থাকি উদ্ভিজ্জ ও প্রাণিজ্জ। অর্থাৎ একটি খাদ্য উদ্ভিদ থেকে পাওয়া যায় অন্যটি প্রাণী থেকে পাওয়া যায়। একজন মুসলমান হিসেবে আমাদের অবশ্যই হালাল-হারাম বেছ খাদ্য গ্রহণ করতে হবে।
যেসব পশুপাখি খাওয়া হারাম
সকল ধরনের বাঘ, সিংহ,হাতি, শিয়াল, কুকুর, বিড়াল, কুমির, বানর ও সজারু ইত্যাদি দাঁত বিশিষ্ট হিংস্র জন্তু খাওয়া হারাম।
ঈগল পাখি, বাজ, পেঁচা, বাদুড়, চিল ইত্যাদি পাঞ্জাধারী হিংস্র পাখি খাওয়া হারাম।
নির্দিষ্ট কিছু পশু যেমনঃ গৃহপালিত গাধা, শূকর ইত্যাদি খাওয়া হারাম।
আল্লাহ তাআলা নোংরা ও নাপাক কিছু খাওয়া হারাম ঘোষণা করেছেন। যেমনঃ মৃত জীবজন্তু, পোকামাকড়, কীটপতঙ্গ, প্রবাহিত রক্ত ইত্যাদি।
এছাড়া সব ধরনের নেশাজাতীয় দ্রব্য যেমনঃ মদ, তামাক, গাজা ইত্যাদি মাদকদ্রব্য। এছাড়া যে সকল খাবার আমাদের কোনো উপকারে নেই উল্টো ক্ষতি করে সেগুলো খাওয়া নিষেধ যেমন বিষ, খড়কুটা ইত্যাদি।
শরীয়তে কিছু প্রাণীকে হত্যা করতে নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং তা খাওয়া সম্পূর্ণ হারাম। যেমনঃ সাপ, ইঁদুর, টিকটিকি, বিচ্ছু, কাক, দোয়েল, ব্যঙ, পিঁপড়া, মৌমাছি, হুদ হুদ ইত্যাদি।
কোন হালাল পশু-পাখি জবাই করার সময় আল্লাহর নাম না নিলে সেই জবাইকৃত হালাল প্রাণীও হারাম হয়ে যায়।
সব ধরনের মৃত প্রাণী এবং প্রবাহিত রক্ত হারাম। কিন্তু দুই ধরনের মৃত প্রাণী ও রক্ত হালাল। প্রাণীগুলো হলো মাছ ও পঙ্গপাল। আর রক্ত হলো প্লীহা ও কলিজা।
যে সকল পশুপাখি হারাম খাদ্য গ্রহণ করবে সেগুলোর গোস্ত, ডিম ও দুধ পান করা হারাম।
যেসব উদ্ভিদ জাতীয় খাবার হারাম
খাদ্য ও পানীয় এর প্রকৃতি হচ্ছে হালাল বা বৈধ হওয়া। এইজন্য উদ্ভিদ, ফল, শস্য ইত্যাদি থেকে তৈরিকৃত পানীয় হালাল। কিন্তু যত ধরনের খাবার ও পানীয় নেশা সৃষ্টি করে তা খাওয়া বা পান করা সম্পূর্ণ হারাম। যেমনঃ মদ, বিয়ার, শ্যাম্পেন, গাজা, আফিম, ইয়াবা ইত্যাদি সব ধরনের নেশা জাতীয় দ্রব্য।
আল্লাহতালা এই দুনিয়ায় যা কিছু হারাম করেছে বাস্তবিক ভাবে তা মানুষের উপকার ও কল্যাণের জন্য। আল্লাহ তায়ালা আমাদের হারাম হালাল বেছে চলার তৌফিক দান করুক আমিন।