ফেক আইডি জিনিসটা আমাদের কাছে খুব কমন একটা বিষয়। কিন্তু এই জিনিসটা সবথেকে বেশি ব্যবহার করা হয় ফেসবুকে কারণ ফেসবুক বর্তমানে সবথেকে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। বর্তমানে অনেক ফেসবুক আইডি রয়েছে কিন্তু তার মধ্যে কোনটা আসল আইডি এবং কোনটা ফেক আইডি সেটা বোঝা খুবই কষ্টকর।
মেয়েদের নামে বেশি ফেসবুক আইডি খোলা হয়ে থাকে কারণ মেয়েদের প্রতি সকলের আকর্ষণ থাকে এবং তারা এই সুযোগে অনেকের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয় এছাড়া আরো বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হয় এ কারনে। আপনি যখন দেখবেন আপনি যার সাথে কথা বলছেন কিন্তু সেটা ফেক আইডি এবং এটা অন্য কেউ ব্যবহার করছে এটা শুনলে আপনার আসলে অনেক খারাপ লাগবে।
ফেক আইডি কেন খোলা হয়
ফেক আইডি খোলার অনেক কারণ রয়েছে। দেখা যায় অনেকে তাদের বন্ধু-বান্ধবের সাথে মজা করার জন্য অনেক সময় ফেক আইডি খুলে আবার কেউ প্রতারণা করার উদ্দেশ্যে ফেক আইডি খোলা থাকে।
আরেকটা ছোট কারণ হতে পারে অনেকের ফেসবুক আইডিতে ফ্যামিলির সকল মেম্বার এড থাকে তাই সে তার আইডি ইচ্ছামত ব্যবহার করতে পারে না যার ফলে সে ফেক আইডি ব্যবহার করে। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় প্রতারণার জন্য এ ফেক আইডি সাধারণত খুলে থাকা হয়।
আজকে আপনাদের সাথে কিছু উপায় নিয়ে কথা বলব যার মাধ্যমে আপনারা সহজেই বুঝতে পারবেন আপনি যার সাথে কথা বলছেন তার আইডি কি আসল নাকি ফেক আইডি। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।
আইডির নাম –
আপনি দেখবেন যেগুলো অরিজিনাল ফেসবুক আইডি সেই আইডির নাম সুন্দর করে দেওয়া থাকে। কিন্তু যে সকল ফেক আইডি রয়েছে সেই আইডি গুলোর নাম আজব ধরনের হয়ে থাকে। সেই আইডি গুলোর নাম বিভিন্ন রকমের দেখতে হয়ে থাকে যা দেখলে আপনি ৮০% সিওর বুঝতে পারবেন কোনটা ফেক আইডি।
ফ্রেন্ড লিস্ট –
ফেক আইডি গুলোতে ফ্রেন্ডলিস্টের সংখ্যা অনেক হয়ে থাকে। আর যদি দেখেন আইডিটি কোন মেয়ের হয় কিন্তু তার ফ্রেন্ডলিস্টে সবগুলো ফ্রেন্ড শুধু ছেলে তাহলে বুঝতে হবে সেটি ফেক একাউন্ট।
রিয়েল আইডি হলে এত ফ্রেন্ড থাকতো না বা মেয়েট হলে মেয়ের পরিমাণ অধিক এবং ছেলের আইডি হলে ফ্রেন্ডলিস্টে ছেলে্র পরিমাণ অধিক হত। তাই ফেক আইডি চেনার জন্য আপনি ফ্রেন্ডলিস্ট একবার যাচাই করে নিতে পারেন।
পিকচার –
ফেক আইডি গুলোতে বেশি ছবি পোস্ট করা থাকেনা। অ্যাকাউন্ট যদি রিয়েল হয় তাহলে দেখবেন একজনের ছবি ফেসবুকের সেই একাউন্টে অনেক পোস্ট করা কিন্তু একাউন্ট যদি ফেক হয় তাহলে বিভিন্ন ধরনের ছবি দেওয়া থাকবে অথবা কার্টুনের ছবি দেওয়া থাকবে।
তাই যে সকল আইডিগুলোতে কার্টুনের ছবি বা কোন মেয়ের শুধুমাত্র দুই একটি পিক দেওয়া থাকে ৮০% সিওর ধরে নিতে হবে সেগুলো ফেক আইডি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
লাইক ও কমেন্ট –
আপনি দেখবেন রিয়েল আইডির থেকে ফেক আইডি গুলোতে লাইক ও কমেন্ট এ পরিমাণ কম থাকে। কারণ যারা রিয়েল অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে তারা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন রকমের পোস্ট করে যার ফলে সেখানে লাইক ও কমেন্ট এ পরিমাণ বেশি হয়।
কিন্তু, ফেক অ্যাকাউন্টগুলো ক্ষেত্রে তারা সব সময় পোস্ট করে না যার ফলে মাঝেমধ্যে পোস্ট করলেও তাদের পোস্টে লাইক ও কমেন্টের পরিমাণ কম থাকে। কারণ তাদের কেউ তেমন চেনে না।
মেসেজ –
ফেক আইডিতে মেসেজ করলে সাধারণত রিপ্লাই পাওয়া যায় না। কারণ ফেক আইডি গুলো খোলা থাকে বিশেষ উদ্দেশ্যে এবং তারা সব সময় একটিভ থাকে না যার ফলে মেসেজ করলেও সেখান থেকে রিপ্লাই আসার সম্ভাবনা কম থাকে।
খারাপ ছবি পোস্ট –
ফেক আইডিতে বেশিরভাগ আজে বাজে ছবি পোস্ট করা হয়ে থাকে। কারণ কেউ চাইবেনা তার রিয়াল একাউন্টে কোন আজেবাজে বা খারাপ ছবি শেয়ার করার জন্য কারণ একটি ফেসবুক আইডি একজন লোকের ব্যক্তিত্ব বহন করে। তাই যে সকল আইডি গুলোতে বেশিরভাগ বা মাঝেমধ্যে আজেবাজে পোস্ট বা কোন খারাপ ছবি শেয়ার করে থাকে তাহলে বুঝতে হবে সেটা ফেক আইডি।
জন্ম তারিখ –
ফেসবুক আইডি ফেক অ্যাকাউন্ট কিনা এটি বোঝার জন্য আপনি তার জন্ম তারিখ চেক করতে পারেন। কারণ রিয়াল একাউন্ট গুলো তাদের অরিজিনাল জন্ম তারিখ দিয়ে থাকে কিন্তু যে সকল ফেক অ্যাকাউন্ট রয়েছে তাদের জন্ম তারিখ ঠিক দেওয়া থাকে না।
যেমনঃ ০১-০১-২০০১ এমন টাইপের জন্ম তারিখ বেশি দেওয়া থাকে।কারণ তারা যখন ফেক আইডি খুলে তখন তাদের জন্ম তারিখে কিছু আসে যায় না।
==> তাই সবসময় চেষ্টা করবেন সকল ধরনের ফেক আইডি থেকে দূরে থাকার জন্য। কারণ, এর মাধ্যমে আপনি যেকোনো সময় প্রতারিত হতে পারেন। আপনি যদি দেখতে পান আপনার নামে কোন ফেক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে তাহলে আপনি আপনার সকল ফ্রেন্ডদের বলে সেই আইডিতে রিপোর্ট মারতে পারেন যেন সেই ফেক একাউন্ট নষ্ট হয়ে যায়।