২০১০ সালের দিকে আরব বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গণবিপ্লবের ঝড় হয়ে গিয়েছিল। পশ্চিমা মিডিয়া আরব বিশ্বের এই গণবিপ্লব কে আরব বসন্ত হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
মিশর থেকে গণবিক্ষোভের শুরু এরপর একে একে লিবিয়া, সিরিয়া, ইয়েমেনসহ বিভিন্ন দেশে তা ছড়িয়ে পরে। এর পরিপ্রেক্ষিতে মিশরের প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারক ক্ষমতাচ্যুত হয়। এরপর লিবিয়ায় আল গাদ্দাফির পতন হয়।
আরব বিশ্বের গণঅভ্যুত্থান ইউরোপের ন্যাটুভুক্ত দেশগুলো এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেখানে অস্ত্র সরবরাহ করে এবং সরাসরি আক্রমণ করে ক্ষমতাসীন সরকারের পতন ঘটায়।
২ ডিসেম্বর, ২০১০ সাল থেকে মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার যে গণবিদ্রোহ বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল তা ইতিহাসে নজিরবিহীন। এপর্যন্ত আলজেরিয়া, বাহারাইন, ইয়েমেন, মিশর, ইরান, লিবিয়া, মরক্কো, ইরাক, সিরিয়া, তিউনিসিয়ায় বড় ধরণের বিদ্রোহ হয়েছে।
আর কিছু কিছু দেশে ছোট আকারে বিদ্রোহ হয়েছে সেই দেশগুলো হলো কুয়েত, ওমান, সৌদি আরব, সোমালিয়া, সুদান, মৌরিতানিয়া। এইসকল বিদ্রোহে প্রতিবাদের ভাষারূপে গণবিদ্রোহের অংশহিসেবে জনসভা, মিছিল, হরতাল, বিক্ষোভ প্রদর্শন ইত্যাদি কর্মসূচি নেয়া হয়।
আর এসব বিদ্রোহ বা প্রতিবাদের কারণে তিউনিশিয়া মিশরের শাসকের পতন হয় বলে এখানে তা বিপ্লব বলে অভিহিত করা হয়েছে। এই বিদ্রোহগুলো সংঘটিত হয়েছে মূলত সরকারের দুর্নীতি, স্বৈরতন্ত্র, দারিদ্র, মানবাধিকার লংঘন, বেকারত্ব ইত্যাদি কারণে। বিদ্রোহ গুলোতে বিশালসংখ্যক যুব সমাজের অংশগ্রহণ ছিল।
তিউনিশিয়ায় মোহাম্মদ বোয়াজিজির ১৮ ডিসেম্বর, পুলিশের দুর্ব্যবহার ও দুর্নীতির প্রতিবাদে আত্মহত্যার মাধ্যমে বিদ্রোহ শুরু করে। তিউনিসিয়ার বিপ্লব সফল হওয়ায় অন্যান্য দেশে অস্থিরতা শুরু হয়ে যায় হলে আলজেরিয়া, জর্ডান, মিশর, ইয়েমেনে বিদ্রোহ শুরু হয়।
১৪ জানুয়ারি তিউনিশিয়ায় জেসমিন বিপ্লব শুরু হয়। এর ফলে শাসক জেন এল আবেদিন বেন আলীর পতন ঘটে পরে তিনি সৌদি আরবের পালিয়ে যায়। একইভাবে মিশরের প্রেসিডেন্ট মোবারক ১১ ফেব্রুয়ারি পদত্যাগ করেন, জর্ডানের বাদশা আবদুল্লাহ প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যান।
ইয়েমেনের রাষ্ট্রপতি আলী আব্দুল্লাহ রাষ্টপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন, লিবিয়ায় গাদ্দাফির পতন ঘটে, সুদানের রাষ্ট্রপতি আলি আব্দুল্লাহ নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
আরব বিশ্বের কয়েক দফায় গণবিদ্রোহের পশ্চিমা মিডিয়া নাম দেয় আরব বসন্ত।