ভুলবশত বা অনিচ্ছাকৃত বা অন্য কোন কারণে কোন ওয়াক্তের নামাজ পড়তে না পারলে ওই নামাজের পরিবর্তে যে নামাজ আদায় করা হয় তাকে কাজা নামাজ বলে। যে কোন ওয়াক্তের ফরজ নামাজ ছুটে গেলে অবশ্যই আপনাকে তার কাজা আদায় করতে হবে।
কাজা নামাজের প্রকারভেদ
কাজা নামাজ দুই প্রকার। যথাঃ
- ফাওয়ায়েতে কালীল এবং
- ফাওয়াতে কাছির।
ফাওয়ায়েতে কালীল
কম ওয়াক্ত নামাজ অর্থাৎ পাঁচ ওয়াক্ত পরিমাণ নামাজ কাজা হলে তাকে অল্প কাজা বা ফাওয়ায়েতে কালীল বলে।
ফাওয়াতে কাছির
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের বেশি নামাজ কাজা হলে তাকে অধিক কাজা বা ফাওয়াতে কাছির বলে।
কাজা নামাজের সময়
নামাজের নিষিদ্ধ সময় গুলো ছাড়া যেকোনো সময় আপনি কাজা নামাজ আদায় করতে পারবেন। তবে ফাওয়ায়েতে কালীল এর ক্ষেত্রে আগের নামাজ আগে এবং পরে নামাজ পড়ে পরে হবে। যেমন আপনি যদি কোনো দিনের যোহর, আসর নামাজ আদায় করে না থাকেন আর মাগির নামাজের পূর্বে সেই কাজা নামাজ আদায় করলে আগে যোহর পরে আসর নামাজ পড়তে হবে।
কাজা নামাজের নিয়ত
যেই ওয়াক্তের কাজা আদায় করবেন সেই ওয়াক্তের নাম নিয়ে পড়তে হবে।
ফজরের কাজায়
আমি কেবলামুখী হয়ে আল্লাহর ফজরের ফরজ দুই রাকাত কাজা নামাজ আদায় করছি। আল্লাহু আকবর।
যোহরের কাজায়
আমি কেবলামুখী হয়ে আল্লাহর উদ্দেশ্যে যোহরের ফরজ চার রাকাত কাজা নামাজ আদায় করছি। আল্লাহু আকবর।
আসরের কাজায়
আমি কেবলামুখী হয়ে আল্লাহর উদ্দেশ্যে আসরের ফরজ চার রাকাত কাজা নামাজ আদায় করছি। আল্লাহু আকবর।
মাগরিবের কাজায়
আমি কেবলামুখী হয়ে আল্লাহর উদ্দেশ্যে মাগরিবের ফরজ তিন রাকাত কাজা নামাজ আদায় করছি। আল্লাহু আকবর।
এশারের কাজায়
আমি কেবলামুখী হয়ে আল্লাহর উদ্দেশ্যে এশারের ফরজ চার রাকাত কাজা নামাজ আদায় করছি। আল্লাহু আকবর।
কাজা নামাজের নিয়ম
কেউ যদি দীর্ঘ সময় নামাজ পড়া থেকে বিরত থাকে। আর কত ওয়াক্ত নামাজ কাজা করেছে তা সঠিক হিসাব না থাকে। তাহলে তাকে অনুমান করে নামাজের কাজা আদায় শুরু করতে হবে।
যখন প্রতিদিনের নির্ধারিত নামাজ আদায় করবে, তখন ধারাবাহিকভাবে ওয়াক্তের সঙ্গে মিল রেখে ঐ ওয়াক্তের কাজা আদায় করে নিবে। এভাবে পড়লে কাজা আদায়ের ধারাবাহিকতা রক্ষা হবে। যে ওয়াক্তের কাজা নামাজ পড়বেন সেই ওয়াক্তের নাম নিয়ে পড়লে ভালো হবে।
সফরের জন্য কোন মানুষ যদি যথা সময়ে নামাজ আদায় করতে না পারে। তবে সে সফর থেকে বাড়িতে আসার পর কাজা কসর আদায় করবে। কসর বলতে এখানে যোহর, আসরে ও ইশা নামাজ ২ রাকাত পড়া।
কোন কারণে যদি নফল নামাজ নষ্ট হয় বা শুরু করার পর ছেড়ে দেয় তাহলে তার পরে কাযা করতে হবে। কারন তার উপর তখন এটি ওয়াজিব হবে।
নফল নামাজ এবং সুন্নতে মুয়াক্কাদা এর কোনো কাজা নামাজ নেই। কিন্তু ফরজ নামাজের সুন্নত ফরয উভয়ের কাজা আদায় করা উত্তম। জোহরের চার রাকাত সুন্নত পড়তে না পারলে তা ফরজ নামাজ শেষে করে নেয়া যায়।
জুমার নামাজের কোন কাজা নামাজ নেই। তবে সম্ভব হলে যোহরের চার রাকাত ফরজ নামাজ পড়ে নিবে।
জীবনে কত রাকাত নামাজ পড়ে নাই তার কোনো হিসাব নাই এমন ব্যক্তি যদি কাজা নামাজ পড়তে চায় তাহলে প্রথমে নামাজের পূর্বে তরতীব অনুযায়ী কাজা আদায় করতে হবে। অর্থাৎ তাকে ওমরি কাজা করতে হবে।
একজন মুমিন মুসলমানের সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত হচ্ছে নামাজ। আল্লাহতালা আখিরাতে সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব নিবেন। আমাদের সবাইকে আগে নামাজ পরে সকল কাজ করতে হবে। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সঠিকভাবে নামাজ পড়ার তৌফিক দান করুন। আমিন।