বুর্জ খলিফা আরবি শব্দ যার বাংলা অর্থ “খলিফার টাওয়ার”। বুর্জ খলিফা উদ্বোধন করা হয় ২০১০ সালের ৪ঠা জানুয়ারি। (উদ্বোধন করেন তৎকালীন দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রাশেদ আল মাকতুম)।
বুর্জ খলিফা উদ্বোধনের পর থেকে অন্য কোন ভবনের উচ্চতা কে কখনো ছাড়িয়ে যেতে পারেনি। বুর্জ খলিফার নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০০৪ খ্রিস্টাব্দে আর কাজ শেষ হয় ২০০৯ খ্রিস্টাব্দে।
মাত্র পাঁচ বছরেই মানুষের তৈরি একটি বিশাল অর্জন’।
এ ভবনটি দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি এটি তৈরিতে ব্যয় হয়েছে আকাশচুম্বী।
বুর্জ খলিফা তৈরিতে প্রায় ১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় হয়েছে।
বুর্জ খলিফা ২০১০ সালে উদ্বোধনের আগে বুর্জ দুবাই নামে পরিচিত ছিল।
বুর্জ খলিফার উচ্চতা ৮২৯.৮ মিটার (২৭২২ ফুট), ৮২৮ মিটার (২৭১৭ফুট) ছাদের উচ্চতা (অ্যান্টেনা ব্যতীত, তবে ২৪৪ মিটার স্পিয়ারসহ)।
বুর্জ খলিফা “দুবাই টাওয়ার” নামেও পরিচিত।
বুর্জ খলিফার বহিঃপ্রাঙ্গণ এ একটি পানির ফোয়ারা রয়েছে।
যার নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১৩৩ মিলিয়ন ব্রিটিশ পাউন্ড (যা বাংলাদেশী টাকায় ১হাজার ৬৯১ কোটি ৩৮ লক্ষ ৭৬ হাজার টাকা পরিমান)
বুর্জ খলিফা ভবনে রয়েছে এক হাজার ১০৪৪ টি অ্যাপার্টমেন্ট।
যার মধ্যে ৪৪তম ও ৭৬ তম তলায় রয়েছে ২টি সুইমিংপুল।
দর্শকদের দর্শনের জন্য রয়েছে ১২৪ তম তলায় প্রকৃতি দর্শনের ব্যবস্থা।
এই ভবনে রয়েছে ১৬০ কক্ষ বিশিষ্ট একটি হোটেল।
বুজ খলিফা- পৃথিবীর বুকে এক অনন্য বিস্ময়কর দৃশ্য। যা দেখে মনে হবে এটি মাটি থেকে আকাশ ছুঁয়ে আছে।
বুর্জ খলিফা অবস্থিত আরব আমিরাতের দুবাই শহর।
বুর্জ খলিফা ১৬০ তলার মানুষের নির্মিত সর্বোচ্চ স্থাপনা।
বুর্জ খলিফা পাওয়ার রয়েছে বিশ্বের সবথেকে দামী ও বিলাসবহুল সুবিধাসমূহ।
বুর্জ খলিফা তৈরি হওয়ার পর অন্য কোন দালাল এর উচ্চতা কে ছুঁতে পারেনি।
বুর্জ খলিফার নিচতলা থেকে ১২৪ তম তলা পর্যন্ত যেতে সময় লাগে মাত্র এক মিনিট কারণ এই ভবনে রয়েছে ৫৪ টি এলিভেটর বা লিফট।
যার কোনটির গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ মাইল।
ভবনে উচ্চমানের বা উচ্চগতিসম্পন্ন লিফট থাকাটাও কোন অস্বাভাবিক ব্যাপার নয়। কারণ এ ভবনটি আইফেল টাওয়ার থেকে তিনগুণ এবং এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিং এর থেকে দ্বিগুণ বড়।
বুর্জ খলিফা দেখতে যেমন সুন্দর ও উচ্চতা সম্পন্ন তেমনি বুর্জ খলিফার রয়েছে অসংখ্য রেকর্ড। চলুন দেখে নেয়া যাক এ কিছু রেকর্ড
১। বিশ্বের সবথেকে বেশি তলা বিশিষ্ট ভবন বুর্জ খলিফা, মোট ১৬০ তলা বিশিষ্ট ভবন
২। বুর্জ খলিফার সর্বতম আবাসন ১০৮ তলা পর্যন্ত
৩। সর্বোচ্চ ভবন রয়েছে ৮২৮ মিটার
৪। রয়েছে বিশ্বের দীর্ঘতম এলিভেটর মোট ৫০৪ মিটার
৫। ৭৬ তলায় রয়েছে বিশ্বের উচ্চতম সুইমিংপুল
৬। ১০৮ তলায় রয়েছে বিশ্বের উচ্চতম মসজিদ
৭। তাছাড়া এতে রয়েছে ৪৪২ মিটার উঁচু বিশ্বের উচ্চতম পর্যবেক্ষণ
৮। এতে রয়েছে বিশ্বের উচ্চতম নাইট ক্লাব
৯। ঘন্টায় ৬৪ কি.মি. সম্পন্ন বিশ্বের দ্রুততম এলিভেটর
১০। আত্মহত্যার দিক দিয়ে এটি রেকর্ডের তালিকায় রয়েছেন (এক ব্যক্তি ২০১১ সালের ১০ মে ১৪৬ তলা থেকে লাফ দেন ৩৮ তলায় এসে তিনি নিহত হন)
এছাড়াও রয়েছে আরও অনেক অনেক রেকর্ড।
উচ্চতম বুর্জ খলিফা নানা কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এছাড়াও এখানে রয়েছে মসজিদ, সুইমিংপুল, হোটেল ও প্রকৃতি দর্শনের সুব্যবস্থা। বুর্জ খলিফার কোথায় কি রয়েছে চলুন একটু চোখ ধাঁধিয়ে নেয়া যাক
বি১ ও বি২ : পার্কিং,কারিগর
খোলাস্থান, নিচ তলা,১-৮ তলা : আরমানি হোটেল
৯ থেকে ১৬ তলা : আরমানি বাসস্থান
১৭ থেকে ১৮ তলা : কারিগর
১৯ থেকে ৩৭ তলা : আবাসিক
৩৮ থেকে ৩৯ তলা : আরমানি হোটেল স্যুট
৪০ থেকে ৪২ তলা : কারিগর
১২৫ থেকে ১৩৫ তলা : কর্পোরেট স্যুট
১৩৬ থেকে ১৩৮ তলা : কারিগর
১৩৯ থেকে ১৫৪ তলা : কর্পোরেট স্যুট
১৫৫ তলা : কারিগর
১৫৬ থেকে ১৫৯ তলা : যোগাযোগের সম্প্রচার
১৬০ তলা : কারিগর
ভ্রমণ পিপাসু মানুষদের জন্য বুর্জ খলিফা বরণ করা একটি স্বপ্ন। প্রত্যেকটি মানুষের ইচ্ছে বুর্জ খলিফা ভ্রমণ করার। বুর্জ খলিফার বিভিন্ন দেয়ালে রয়েছে বিভিন্ন অঞ্চলের হাজার শিল্পীদের শিল্পীদের আঁকা চিত্রকর্ম।
আরব আমিরাত পর্যটকদের অনেক আকর্ষণ করে থাকে। বুর্জ খলিফা ভ্রমণ করলে নিয়ে আসা যায় সাথে অনেক সুন্দর সুন্দর স্মৃতি যা সকল কেমন মধ্যকার করবে। বুর্জ খলিফা মানুষের তৈরী এক অনন্য অর্জন। ভ্রমণের মাধ্যমে পেতে পারেন একটি সুন্দর অভিজ্ঞতা।