ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি জনপ্রিয় ধাপ হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং। আজকে আমরা জানবো সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি? কিভাবে এ মার্কেটিং করা হয়? এবং এ মার্কেটিং এর সুবিধা কি? এইসব বিষয় সম্পর্কে।
বর্তমানে ইন্টারনেটের যুগে ছোট মানুষ থেকে বুড়ো পর্যন্ত প্রায় সব বয়সের মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ার সাথে সম্পৃক্ত। বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো হলোঃ ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব ইত্যাদি।
এই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম গুলোর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির সাথে সাথে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর জনপ্রিয়তাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি?
বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে সেখানে যেকোনো পণ্য বা সেবার বিজ্ঞাপন বা শেয়ারের মাধ্যমে প্রচার প্রচারণা করার প্রক্রিয়া বা কৌশলকে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বলে।
বর্তমানে বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন ৪ কোটি ৭৬ লাখ মানুষ। এই বিশাল সংখ্যক মানুষকে টার্গেট করে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করা হয়।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং যেভাবে করবেনঃ
সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি ব্যবহার করে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করা হয়। এই প্ল্যাটফর্ম গুলো ব্যবহার করে কিভাবে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
ফেসবুক
ফেসবুক ব্যবহার করে না বর্তমানে এমন মানুষ পাওয়া যাবেনা। ফেসবুকে আপনার পণ্যের ক্যাটাগরি অনুযায়ী একটি পেজ খুলবেন। এরপর সেই পেইজে লোকজন বা মেম্বার অ্যাড করবেন এবং ফলোয়ার বাড়াবেন।
এভাবে লাইক করা লোকদের সংখ্যা বাড়াতে থাকবেন। আপনার পেজে মেম্বার যত বেশি হবে তত বেশি পেজটি জনপ্রিয় বা পপুলার হয়ে উঠবে। এরপর আপনার পণ্যগুলোর ছবি বা ভিডিও করবেন। তারপর এই ছবি বা ভিডিও সহ পণ্যের বিবরণ পেইজে পাবলিশ করবেন।
টুইটার
ফেসবুকের মতন টুইটারে প্রথমে পেজ খুলবেন এবং ফলোয়ারের সংখ্যা বাড়াবেন। এরপর আপনার পণ্যের সাথে জড়িত সকল আপডেট, অফার, সার্ভিস পোস্ট বা প্রচার করবেন।
ইনস্টাগ্রাম
ইনস্টাগ্রামেও ফেসবুকের মতন ফ্রিতে একটি পেজ বা গ্রুপ খুলবেন। আপনার পণ্যের ছবি তুলে সুন্দরভাবে গ্রাফিক্স ডিজাইন করে সেখানে পোস্ট করবেন। এভাবে আপনি আপনার পণ্যের মার্কেটিং করতে পারবেন।
এভাবে খুব সহজে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে হাজারের মানুষের কাছে পণ্য বা সেবা তুলে ধরতে পারবেন।
ইউটিউব
পৃথিবীর সব বয়সের মানুষ ইউটিউব ব্যবহার করে থাকে। সকল অ্যান্ড্রয়েড বা স্মার্টফোনে ইউটিউব রয়েছে। এটি খুবই জনপ্রিয় একটি সোশ্যাল মিডিয়া। ইউটিউবে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার জন্য প্রথমে ফ্রিতে আপনাকে একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে হবে।
এরপর আপনার প্রোডাক্ট বা পণ্য বা সেবা বা সার্ভিসের ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করতে হবে। আপনার পণ্য বা সেবাকে সুন্দরভাবে ভিডিও করে এবং পণ্য সম্পর্কে সুন্দর সহজ সরল ভাষায় বর্ণনা দিয়ে ভিডিও আপলোড করবেন।
এভাবে আপনার পণ্যের মার্কেটিং বা প্রমোশন করে নিতে পারবেন।
এছাড়া যারা বিখ্যাত ইউটিউবার বা যাদের চ্যানেলে লক্ষ লক্ষ সাবস্ক্রাইবার আছে তাদেরকে টাকা দিয়ে আপনার পণ্যের প্রমোশন বা বিজ্ঞাপন দিতে পারবেন। এভাবে আপনি আপনার পণ্যের মার্কেটিং করে পণ্যের সেল বা বিক্রি বৃদ্ধি করাতে পারবেন।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর সুবিধাঃ
সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে আপনি ঘরে বসেই লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে কম সময়ের মধ্যে আপনার পণ্য বা সেবা সম্পর্কে মার্কেটিং করতে পারছেন। সশরীরে আমাদের পক্ষে এত মানুষের কাছে গিয়ে মার্কেটিং করা সম্ভব না।
সুই থেকে শুরু করে রেফ্রিজারেটর পর্যন্ত ছোট বড় সকল ধরনের প্রোডাক্ট বা পণ্য মার্কেটিং করতে পারবেন। বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা ঘরে বসেই বিভিন্ন ধরনের পণ্য বা সেবা ক্রয় করে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনার পন্যের ছবি সহ ডিটেলস লেখা যায় ফলে ক্রেতা পণ্য সম্পর্কে বিশদ ধারণা পাবে। এভাবে আপনার পণ্য দ্রুত সবার কাছে ছড়িয়ে পড়বে এবং পন্যের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে।
সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে কম খরচেই আপনার পণ্য বা সেবার বিজ্ঞাপন বা প্রমোশন বা মার্কেটিং করতে পারবেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ফ্রিতে নিজেই প্রচার করতে পারবেন।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর মাধ্যমে আমরা কোন বিশেষ ব্যক্তি বা জায়গা কে লক্ষ্য করে পণ্য প্রচার বা প্রমোশন করতে পারি। এর ফলে পণ্য বেশি বিক্রি হয়।
এখানে আপনি আপনার পণ্যের বিজ্ঞাপন কোন কোন মানুষদের দেখাবেন, কয়দিন দেখাবেন, কোন কোন জায়গায় দেখাবেন সম্পূর্ণটা আপনার উপর।
সশরীরে একদিনে আপনি কয়টা জায়গায় বা কয়জন মানুষের কাছে গিয়ে পণ্যের মার্কেটিং করতে পারবেন। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনি এক ঘণ্টায় হাজার হাজার মানুষের কাছে আপনার প্রডাক্ট বা পণ্যের মার্কেটিং করতে পারবেন। এর ফলে আপনার ক্যাডার সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।
আমরা যখন ভালো কোনো ব্র্যান্ডের জিনিস কিনি তখন ওই জিনিসের প্রতি অধিক বিশ্বাস ও ভরসা পাই। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে খুব সহজেই আপনি আপনার ব্র্যান্ড তৈরি করতে পারবেন। আপনার ব্র্যান্ড যখন পরিচিতি লাভ করবে তখন সহজে আপনার পণ্য সবাই কিনবে।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং করে ঘরে বসেই আপনি টাকা ইনকাম করতে পারবেন। বর্তমান সময়ে দেশে ও দেশের বাইরে বড় বড় কোম্পানির প্রোডাক্ট সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে ক্রেতাদের কাছে তাদের পণ্য পৌঁছে দিচ্ছে এবং ব্রান্ডকে প্রমোশন করছে।