কিভাবে অঙ্গীকারনামা লিখতে হয় সে সম্পর্কে আজকের পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। অঙ্গীকারনামা লেখার নিয়ম শেখার আগে আমাদের জানতে হবে অঙ্গীকারনামা কি? অঙ্গীকারনামা কখন ব্যবহৃত হয়?
দুই বা ততোধিক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান আইন মেনে পরস্পর কোনো কাজ বা প্রকল্পের লেনদেন করার সময় ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে সাক্ষীর উপস্থিতিতে কাগজে যে চুক্তি করে তাকে চুক্তিপত্র বা অঙ্গীকারনামা বলে।
বিভিন্ন কাজে অঙ্গীকারনামা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যেমনঃ কারো সাথে লেনদেন করার সময়, ব্যবসা করার পূর্বে, ঋণ নেওয়ার সময়, কোন কাজ বা ঠিকাদারি কন্ট্রাক্ট দেওয়ার সময়।
ধরুন আপনার সাথে কেউ লেনদেন করার সময় প্রতারণা করছে অথবা ঋণ নিয়ে এখন ঋণ পরিশোধ করছে না অথবা কোন কাজে আপনার টাকা আত্মসাৎ করেছে এই অবস্থায় আপনি এই চুক্তি পত্র বা অঙ্গীকারনামা দিয়ে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারবেন।
তাহলে আপনি আপনার সমস্যার সমাধান পাবেন। ভবিষ্যতের কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা থেকে নিজেকে বা নিজের ব্যবসাকে বাঁচানোর জন্য অঙ্গীকার নামা বা চুক্তিপত্র লেখা হয়।
বর্তমান সময়ে মানুষকে বিশ্বাস করা কঠিন। শুধু মুখের কথায় চুক্তি করলে আপনি প্রতারিত হতে পারেন। মুখের কথা অস্বীকার করে খেলা সহজ কিন্তু আপনার কাছে যদি চুক্তিপত্র বা অঙ্গীকারনামা থাকে তখন সেটা অস্বীকার করতে পারবে না।
ফলে আপনি খুব সহজে আইনি সহায়তা দিতে পারবেন। অঙ্গীকারনামা সাধারণ কোন কাগজে না লিখে অবশ্যই স্ট্যাম্পে লিখবেন। বাজারে স্ট্যাম্প কিনতে পাওয়া যায়।
কেনার সময় অবশ্যই সরকার ধারা নির্ধারিত মূল্যের স্ট্যাম্প নিবেন। জুডিশিয়াল ও নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে সব ধরনের অঙ্গীকারনামা চুক্তিপত্র লেখা ভালো।
কিভাবে অঙ্গীকারনামা লিখবেন
সর্বপ্রথম তারিখ লিখবেন।
দুই পক্ষের নাম, ঠিকানা, মোবাইল নাম্বার, ভোটার আইডি কার্ড নাম্বার ইত্যাদি উল্লেখ করতে হবে।
যে কারণে অঙ্গীকারনামা বা চুক্তিপত্রটি লেখা হচ্ছে সেই কারণটি অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে।
কোন পক্ষ কোন ভূমিকায় থাকবে তা উক্ত চুক্তিপত্রে বা অঙ্গীকারনামায় উল্লেখ করতে হবে।
অঙ্গীকারনামায় কতদিন চুক্তির মেয়াদ থাকবে সে বিষয়টি লিখতে হবে।
এরপর উভয়পক্ষের চুক্তির যাবতীয় শর্তাবলী উল্লেখ করতে হবে।
অঙ্গীকারনামা বা চুক্তিপত্রের নিচে দুই পক্ষের তারিখসহ স্বাক্ষর এবং উভয় পক্ষের সাক্ষীদের সাক্ষ্যর দিতে হবে।
উভয়পক্ষের কেউ যদি ভবিষ্যতে চুক্তি ভঙ্গ করে তাহলে তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে সেটি লিখতে হবে।
আইনের দৃষ্টিতে বৈধ হতে হলে যে সকল শর্তে চুক্তি বা অঙ্গীকারনামা লিখতে হবে।
চুক্তি সম্পাদনকারী উভয় ব্যক্তিকে অবশ্যই সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ এবং আইনের দৃষ্টিতে সাবালক হতে হবে।
একজন ব্যক্তি অন্য আরেকজন ব্যক্তিকে প্রস্তাব প্রদান করবে এবং অন্য ব্যক্তি যদি প্রস্তাব গ্রহণ করে কোন কিছু প্রতিদান করতে হবে। কারণ প্রতিদান ছাড়া কোনো চুক্তি কার্যকর হয় না।
একটি আদর্শ অঙ্গীকারনামা নমুনা
আমি নিম্নস্বাক্ষরকারীঃ……………….
পিতাঃ………… মাতাঃ………….
পেশাঃ…………… ঠিকানাঃ……………
বয়সঃ………. জাতীয়তাঃ……….
ধর্মঃ…………. জাতীয় পরিচয় পত্র নংঃ………………
এ মর্মে অঙ্গীকার পূর্বক ঘোষণা করছি যে, (যে যে বিষয়ের উপর অঙ্গীকার করবেন সেই সব শর্তাবলি উল্লেখ করতে হবে এবং সেই সব বিষয়ে ১,২,৩…….এরকম নাম্বার দিয়ে উল্লেখ করতে হবে)
কোন আইনে সমস্যা থাকলে সেটি উল্লেখ করতে হবে। (শর্তাবলী ভিতরে থাকবে যদি দরকার পড়ে)
আমি ঘোষণা করছি যে, আমি পুরোপুরি সজ্ঞানে, সুস্থ মস্তিষ্কে এবং কারো কোন প্ররোচনা ব্যতীত এই অঙ্গীকার নামায় স্বাক্ষর করিলাম।
তারিখঃ
অঙ্গীকারকারীর স্বাক্ষর
……………………
নামঃ…………….
ঠিকানাঃ……………..
মোবাইল নাম্বারঃ………………
ইমেইলঃ………………