রোজা বা সাওম একটি শারীরিক ইবাদত। তাই অবশ্যই আমাদের এই মাসে শারীরিক সুস্থতার দিকে বেশি খেয়াল রাখতে হবে।
রমজান মাসে স্বাস্থ্য সচেতনতায় যত্নবান হতে হবে যাতে করে সবগুলো রোজা রাখা যায়। এছাড়া কোরআন তেলাওয়াত এবং অন্যান্য নফল ইবাদত পালন করতে যেন কোনো অসুবিধা না হয় সে জন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষার প্রতি যত্নবান হতে হবে।
রমজান মাসে খাবার গ্রহণের সময় সূচিতে পরিবর্তন হয়। রমজান মাসে আমরা সাধারণত দুবেলা খাবার খেয়ে থাকি। আমরা অনেকেই জানিনা রোজা রাখার পর কি ধরনের খাবার খেলে স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। আসুন জেনে নিই রমজানে স্বাস্থ্য সচেতনতা সম্পর্কে-
তীব্র গরমের মৌসুমে রমজান মাসে গরমে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। তাই আমাদের ইফতারের সময় বেশি বেশি করে পানি পান করতে হবে।
এছাড়া বিভিন্ন ফলের শরবত, শসা, লেবু পানি, ডাবের পানি, টমেটো ইত্যাদি পানি শূন্যতা পূরণ করবে। বেশি চিনিযুক্ত পানীয় এবং প্রক্রিয়াজাত ফলের রস না খাওয়া উত্তম।
আমরা অনেকই ফ্রিজের বেশি ঠান্ডা পানিতে ইফতার করি। এই ঠান্ডা পানি দিয়ে ইফতার করলে হজমে সমস্যা করে, পিপাসা বাড়িয়ে দেয় তাই বেশি ঠান্ডা পানি দিয়ে ইফতার করা যাবে না। স্বাভাবিক তাপমাত্রায় পানি ও শরবত পান করবেন।
ইফতার ও সেহরির সময় ভাজাপোড়া ও বেশি মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া যাবেনা। পিয়াজু, ছোলা, চপ, বেগুনি ইত্যাদি ভাজাপোড়া খাবার স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। সেহরি ও ইফতারের সময় কম তেলযুক্ত খাবার খাওয়াই উত্তম।
ভাজা ছোলা বুট না খেয়ে সেদ্ধ পানিতে ভেজা কাঁচা ছোলা বুট খেতে পারেন। এছাড়া চিড়া দই, খিচুড়ি, সিদ্ধ নুডুলস ইত্যাদি খাবার খেতে পারেন। ইফতারের সময় বেশি বেশি তাজা ফলমূল খাবেন।
যেমন তরমুজ, বাঙ্গি, কমলা, মাল্টা ইত্যাদি।
যেসব খাবার বেশি পানি ধরে রাখতে পারে সেগুলো খাবেন। সেহরির সময় শাকসবজি খাবেন।
চর্বি জাতীয় খাবার খাবেন না। সেহরিতে আমিষ ও প্রোটিন জাতীয় খাবার খান। যেমনঃ ডিম, দুধ, মাছ, মুরগির মাংস, ডাল ইত্যাদি।
সর্বোপরি আমাদের এমন খাবার খাওয়া উচিত যাতে রোজা পালন করার সহজ হয় এবং ইবাদতে অসুবিধা না হয়।
রমজান মাসে অনেকেই সেহরি না খেয়ে রোজা রাখে যেটা মোটেও ভালো নয়। কারণ সেহরী করা সুন্নত এক্ষেত্রে আপনি সুন্নত থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এছাড়া আমাদের সঠিক সময় ইফতার গ্রহণ করতে হবে ইফতার গ্রহণে অলসতা করা যাবে না। রমজান মাসের সেহরি ও ইফতার করা সুন্নত। যারা নিয়মিত ওষুধ সেবন করেন তারা রমজান মাসে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ গ্রহণের সময়সূচি ঠিক করে নেবেন।
রমজান মাস ত্যাগের মাস এটি ভোগের মাস নয়। রমজান মাসের সেহরি ও ইফতারের বেশি বেশি খাবার খাওয়া যাবেনা পর্যাপ্ত পরিমাণে খেতে হবে।
আমরা অনেকেই রোজার সময় আমাদের উদ্দেশ্য ভুলে যাই। রোজা বা সাওম মানে বিরত থাকা।
আমাদের সকল ধরনের খারাপ অভ্যাস ও কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে হবে পাশাপাশি অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। পরিমাণমতো এবং নিয়মিত খাবার গ্রহণ সুস্বাস্থ্যের নিয়ামক।