ই সিম কার্ড হল ট্রেডিশনাল সিম কার্ডের নতুন ভার্সন। ট্রাডিশনাল সিমকার্ড বলতে আমি বুঝিয়েছি যে আমরা বর্তমানে যে সকল সিম কার্ড গুলো ব্যবহার করে এই ধরনের সিম কার্ড গুলো কে।
আপনারা একটু খেয়াল করলে দেখতে পারবেন কিছুদিন ধরে ই সিমকার্ড নামের এক ধরনের সিম কার্ডের কথা প্রচলিত হচ্ছে। আসলে এই ই সিম কার্ড কি? এটি আসলে কিভাবে ব্যবহার করতে হয়?
এ ধরনের প্রশ্ন আমাদের অনেকের মনেই ঘুরপাক খায়। নিত্য নতুন প্রযুক্তির যে ধরনের উন্নতি দেখা যাচ্ছে তাই প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে চলতে না পারে তাহলে অনেক কিছুই অজানা থেকে যাবে। এজন্য আপনার প্রতিদিন চেষ্টা করবেন প্রযুক্তির খবর গুলো নিয়মিত পড়তে। এতে নিত্যনতুন উদ্ভাবন হওয়া প্রযুক্তিগুলো সম্পর্কে আপনাদের ধারণাগুলো স্পষ্ট হয়ে যাবে।
কিছুদিন আগে বাজারে আসা যে সকল নতুন স্মার্টফোন গুলো রয়েছে এসকল ডিভাইসে আপনি খেয়াল করলে দেখতে পাবেন এখানে ই সিম কার্ডের অপশন রয়েছে। অনেকেই হয়তো এই ধরনের কোন অপশন সম্পর্কে অবগত নয়। এনএফসি নামক এক ধরনের অপশন আপনারা দেখে থাকবেন।
নতুন স্মার্টফোনগুলো পুরাতন স্মার্টফোনের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। আলাদা এই কারনে যে এই স্মার্টফোনগুলোতে প্রথমবারের মতো আপনি পাবেন ই সিম কার্ডের অপশন। পুরাতন স্মার্টফোনগুলোতে যখন প্রথমবারের মতো দুটি সিম স্লট দেয়া হয়েছিল তখন নিশ্চয়ই গ্রাহকরা অনেক উপকৃত হয়েছিল। তবে ফিচার ফোন গুলোতে আরো বেশি সিম কার্ডের অপশন দেখা যায়।
আইফোনে খেয়াল করলে দেখে থাকবেন তারা ইদানিং দুটি সিম কার্ডের ব্যবহার শুরু করেছে। কিন্তু পরবর্তীতে এর থেকে বড় সুবিধা যোগ করতে যাচ্ছে আইফোন কম্পানি। আইফোন ইউজাররা এর পরবর্তী সংস্করণ এর ফোনগুলোতে ই সিম কার্ডের সুবিধা পেতে পারেন।
ই সিম কার্ড কি?
ই সিম কার্ড হল আপনার মোবাইলে থাকা ডিজিটাল এমবেডেড করা সিম কার্ড। অর্থাৎ এ ধরনের সিম কার্ড গুলো আপনার মোবাইলের মধ্যে আগে থেকেই দেওয়া থাকে। এ সিম কার্ড গুলো আপনি কখনোই খুলতে বা লাগাতে পারবেন না। তবে এই ই সিম কার্ড এর পূর্ণরূপ হচ্ছে এমবেডেড সিম কার্ড।
আমরা বর্তমানের সিম কার্ড গুলো যেভাবে ব্যবহার করি এবং এ সিম কার্ড গুলো যেভাবে কাজ করে ই সিম কার্ড গুলো ঠিক একই রকমভাবে কাজ করবে কিন্তু আপনি ই সিম কার্ড খুলতে পারবেন না। আর তাছাড়া যেহেতু আপনার মোবাইলের চিপ এর মধ্যে এটি দেওয়া থাকে তাই নিশ্চয়ই এটি ট্রাডিশনাল সিম কার্ডের মত এত বড় হয় না। সাধারণ যেকোনো সিম কার্ড থেকে আরও দশগুণ ছোট হয়ে থাকে এই ধরণেরই ই সিম কার্ড গুলো।
যেহেতু ই সিম কার্ড গুলো আপনার মোবাইলের মাদারবোর্ড এর সাথে সংযুক্ত থাকে তাই এটি স্মার্টফোনের হার্ডওয়ার এর সাথেই আসে। ট্রাডিশনাল সিম কার্ডের মত আপনি এক অপারেটর থেকে আরেক অপারেটরে যেতে পারবেন না। অর্থাৎ এখানে ইন্সটল এবং আনইন্সটল একটি অপশন থাকবে।
যেখানে আপনি আলাদা আলাদা সিমকার্ড ইন্সটল করতে পারবেন এবং আগের সিম কার্ডটি আনইন্সটল করে দিতে পারবেন। নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন কোন অপারেটর পরিবর্তন করার জন্য আপনাকে দৌড়াতে হবে না এবং কাস্টমার কেয়ারে ধরনা দেওয়া লাগবে না।
আর নতুন সিম কার্ড কেনার তো কোন দরকারই হবে না। আপনি শুধুমাত্র কল করে বা আপনার অপারেটরের অফিশিয়াল অ্যাপ ডাউনলোড করে নতুন কোন সিম রেজিস্ট্রেশন করে নিতে পারবেন। ভবিষ্যতে ই সিম কার্ডে আরো অনেক ধরনের ফিচার এড করা হবে তবে এখনো কিন্তু ই সিম কার্ড এর প্রচলন তেমন হয়নি তবে অদূর ভবিষ্যতে এ ধরনের সিম কার্ড এর প্রচলন যে সবার আগে অগ্রাধিকার পাবে তা বলাই যায়।
ই সিম কার্ড কিভাবে কাজ করে
যেহেতু আগেই বলেছি ই সিমকার্ড হলো আপনার স্মার্টফোনের হার্ডওয়ারের কোন একটি অংশ তাই আপনার অপারেটরের অ্যাপস বা প্রোফাইল ডাউনলোড বা এড করা না পর্যন্ত এ ধরনের সিমকার্ড এক্টিভেট হবে না। যদিও পদ্ধতিগুলি অনেক জটিল মনে হচ্ছে এখন কিন্তু যখন আমরা সিমকার্ড পুরোপুরি ব্যবহার করা শুরু করবো তখন কিন্তু এত জটিল মনে হবে না।
ধরুন আপনার যারা আইফোন ব্যবহার করেন আগে আইফোনের স্মার্ট ওয়াচ কানেক্ট করার জন্য ব্যবহার করা লাগতো ব্লুটুথ। কিন্তু এই ই সিম কার্ড এর প্রচলন পুরোপুরিভাবে শুরু হলে স্মার্ট ওয়াচ বা এ ধরনের যে কোন ওয়ারলেস ডিভাইস সরাসরি আপনার মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করেই অপারেট করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আর ব্লুটুথ এর সাহায্য নেয়া লাগবেনা।
ই সিম কার্ডে হলো ভবিষ্যতের সিম কার্ড। একই সাথে আপনি অনেকগুলো অপারেটর একই সাথে ব্যবহার করতে পারবেন। ই সিম কার্ড এর আদলে তখন রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি ভিন্ন হবে। খুব সহজেই আপনি এক অপারেটর থেকে আরেক অপারেটরে ট্রান্সফার হতে পারবেন। এজন্য আপনাকে বারবার সিম পরিবর্তন করা লাগবে না শুধুমাত্র একটি সফটওয়্যার এর দ্বারাই আপনি সকল সিম কার্ড গুলো একসাথে এক জায়গাতে ম্যানেজ করতে পারবেন।
প্রযুক্তির ছোঁয়ায় ভবিষ্যতে আরো অনেক ধরনের সুবিধা এবং পরিবর্তন আসবে যা আমরা এখন কল্পনা মনে করতেছি। বর্তমানে আমরা শুধুমাত্র প্রযুক্তির উপর নির্ভর করেই এগিয়ে যাচ্ছি খুব দ্রুত গতিতে। মানুষের কাজ গুলোকে আরো অসুবিধা এবং সহজ করার জন্য প্রযুক্তি দারুন ভূমিকা রাখতেছে।